বরগুনা প্রতিনিধি ॥ বরগুনায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার ঘর নির্মাণে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। খরচ বাঁচাতে এসব ঘর নির্মাণে প্রকল্প নির্ধারিত নকশাই বদলে ফেলা হয়েছে। অন্যদিকে, মূল ঘরের মেঝের উচ্চতা দুই ফিট হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে উচ্চতা দেয়া হয়েছে তার অর্ধেক। ব্যবহার করা হয়েছে নিন্মমানের সামগ্রী। মূল ঘর এবং বারান্দায় পৃথক তিনটি চাল দেয়ার কথা থাকলেও দেয়া হয়েছে একটি চাল। এতে ঘরের সৌন্দর্য্য যেমন হারিয়েছে, তেমনি বেড়েছে দুর্যোগ ঝুঁকিও। এভাবে নানা কারচুপির মধ্য দিয়ে এ প্রকল্প থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন সুবিধাভোগী পরিবারের সদস্যরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে বরগুনা সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের দক্ষিণ খাজুরতলা গ্রামে দরিদ্র ও অসহায় গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ২১৯ টি ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যেই সেসব ঘরের ৩০টি ঘর হন্তান্তর করা হয়েছে সুবিধাভোগী পরিবারের হাতে। প্রকল্প নির্ধারিত নকশা অনুযায়ী এসব ঘরের সামনে ও পেছনের বারান্দা এবং মূল কক্ষের তিনটি চাল পৃথক পৃথকভাবে বানানোর কথা। অথচ নির্ধারিত নকশা অনুসরণ না করে খরচ বাঁচাতে মূল ঘরসহ সামনে ও পেছনের বারান্দার চাল এক করে দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের সুবিধাভোগী মায়ারাণী (৩৫) জানান, ঘরের দেয়ালে প্লাস্টার এখনই উঠে যাচ্ছে। মেঝের প্লাস্টারেও ফাটল ধরে উঠে যাচ্ছে। দেয়ালে যে চুন লাগানো হয়েছে, এ যেন নাম মাত্র।
বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবীর সাংবাদিকদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। এ বিষয়ে বরগুনা সদর উপজেলায় সদ্য যোগদানকৃত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে পারবেন না তিনি। তবে, এসব ঘর প্রকল্প নির্ধারিত নকশার সাথে নির্মিত ঘরের ভিন্নতা রয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
প্রধানমন্ত্রীর ঘর প্রকল্পে দুর্নীতি বিষয়ে জানতে চাইলে বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, আমিও এসব অনিয়মের কথা শুনেছি। তবে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর গাফিলতিকে দায়ী করছেন তিনি। এসব বিষয় খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। অসহায় গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার গৃহ নির্মাণে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানান সদ্য যোগদানকৃত সদর উপজেলা নির্বাহি অফিসার সামিয়া শারমিন।
Leave a Reply